• মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০৪ পূর্বাহ্ন |
  • English Version

জামালপুরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে গিয়ে আইসিডিডিআরবি’র তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ, বাড়ছে করোনা ও নিরাপত্তা ঝুঁকি

জামালপুর প্রতিনিধি:
জামালপুরে করোনা বিষয়ে জরিপের তথ্য ও করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন বাসাবাড়িতে যাচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ও বিনা অনুমতিতে বিভিন্ন বাসায় ঢুকে তথ্য সংগ্রহ করায় তাদের কার্যক্রম নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন বাসায় করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহের জন্য মুখ ও নাকের সোয়াব গ্রহণ করছে তারা। এভাবে অপরিচিত এসব ব্যক্তি বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ঘুরে বেড়ানোয় করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতার ভুগছেন অনেকেই। যদিও জেলার সিভিল সার্জন বলছেন, তথ্য ও নমুনা সংগ্রহের জন্য তাদের অনুমতি রয়েছে। তবে এবিষয়ে কোন কিছু জানা নেই সদর উপজেলা প্রশাসনের।
শনিবার শহরের সরদারপাড়া এলাকায় যায় মো. শাহানুজ্জামান ও ননী গোপাল মজুমদার নামে আইসিডিডিআরবির পরিচয়দানকারী দুই ব্যক্তি। তাদের একজন নিজেকে আইডিডিআরবি’র রিসার্চ এসিট্যান্স ও অন্যজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বলে পরিচয় দেয়। তারা বিভিন্ন বাসায় ঢুকে করোনা সচেতনতা বিষয়ে তথ্য ও করোনা পরীক্ষার জন্য কয়েকটি পরিবারের সদস্যদের নাক, মুখের সোয়াব সংগ্রহ করেন। তথ্য সংগ্রহের সময় তাদের বিরুদ্ধে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব না মানা, একই কলম ব্যবহার করে সকলের স্বাক্ষর নেওয়া ও ভাইরাস প্রতিরোধে পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী না মানার অভিযোগও উঠে। এসময় অনেক বাসায় বিনা অনুমতিতে প্রবেশের অভিযোগ করেন অনেকেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে এভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে তথ্য সংগ্রহ ও নমুনা পরীক্ষার ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেইসাথে অপরিচিত এসব লোকের তথ্য সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগিয়ে কোন অপরাধীচক্র বড় ধরনের অঘটনও ঘটাতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
শহরের সরদারপাড়ার বাসিন্দা জাহিদ হাসান উৎসব জানান, “হঠাৎ দেখি ছাদের উপর অপরিচিত ৩ জন লোক উঁকিঝুঁকি করছে। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা ঢাকা আইসিডিডিআরবি থেকে এসেছে বলে জানান। পরে দুটি বাসার দুটি ইউনিটের সদস্যদের নাম, ঠিকানা জ¦র আছে কিনা এসব বিষয়ে তথ্য নিয়ে চলে যায়।”
পশ্চিম কাচারীপাড়া এলাকার মঞ্জিল(৪৫) জানান, “কিছু লোক এসে বলে বাইরে করোনা পরীক্ষা করতে ৪ হাজার টাকা লাগে। তারা বিনামূলে করোনা পরীক্ষা করতে এসেছে। একথা বলে তারা তার স্ত্রী-সন্তানসহ ৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করে।”
এছাড়াও শহরের সরদারপাড়া, কাচারীপাড়া, বটতলার বিভিন্ন বাড়ি থেকে তথ্য ও করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছে জানা গেছে।
মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম জানান, “একেতো তথ্য ও নমুনা সংগ্রহকারীরা জেলার বাইরে থেকে এসেছেন তার ওপর তারা ঠিকমতো স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বাড়িতে বাড়িতে ঘুরায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। সেইসাথে কোন অপরাধীচক্র অপরিচিত ব্যক্তিদের তথ্য ও নমুনা সংগ্রহের সুযোগ নিতে পারে।”
জামালপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিন জানান, “আইসিডিডিআরবি বা এরকম কোন সংস্থার জরিপের বিষয়ে আমাদের কোন কিছু জানা নেই। ”
সিভিল সার্জন ডা: প্রণয় কান্তি দাস জানান, তথ্য ও নমুনা সংগ্রহের বিষয়ে তাদের অনুমতি আছে। তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের সেসব কাজ করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গসহ কোন অভিযোগ থাকলে তা লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন সিভিল সার্জন।
জামালপুর জেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রন্তের সংখ্যা ৪০৪ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৭৯জন, মারা গেছেন ৫ জন।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।