• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০১ পূর্বাহ্ন |
  • English Version

নকলায় আ’লীগ নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতন ও মিথ্যা খবর প্রকাশের প্রতিবাদে নিন্দা সংবাদ সম্মেলন

নকলায় আ’লীগ নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতন ও মিথ্যা খবর প্রকাশের প্রতিবাদে নিন্দা সংবাদ সম্মেলন

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি:

শেরপুরের নকলা উপজেলার ৩নং উরফা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নূরে আলম তালুকদার ভূট্টোর বিরুদ্ধে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ’র নেতা-কর্মীদের ওপর অজ্ঞাত কারনে অত্যাচার, জুলুম, নির্যাচন ও বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করাসহ মধ্য রাতে এক অন্তসত্বা নারী ও আওয়ামী লীগ নেতার পরিবারের সদস্যদের শারীরিক নির্যাতন করার প্রতিবাদে নিন্দাজ্ঞাপন পূর্বক সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

২০ মার্চ রাতে নকলা প্রেস ক্লাব-এর অফিস কক্ষে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের পক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ৩নং উরফা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।

সংবাদ সম্মেলনে উরফা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নূরে আলম তালুকদার ভূট্টোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ সম্বলিত লিখিত বক্তব্য উপস্থিত সাংবাদিকদের পাঠ করে শুনান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৩নং উরফা ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আক্তারুজ্জামান। এছাড়া ওই চেয়ারম্যান ও তাঁর অনুসারী বেশ কিছু লোকের নাম উল্লেখপূর্বক বিভিন্ন অভিযোগ সম্বলিত মৌখিত বক্তব্য রাখেন উরফা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নাজিম উদ্দিন, ইউনিয়ন যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মিয়া, ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ নেতা রুবেল ফরাজী ও জসিম উদ্দিনসহ স্থানীয় অনেকে।

উরফা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আক্তারুজ্জামান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নূরে আলম তালুকদার ভূট্টো বিজয়ী হওয়ার পরদিন থেকেই ভূট্টোর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারী কিছু সন্ত্রাসী প্রকৃতির যুবক ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ’র নেতা-কর্মীদের ওপর অজ্ঞাত কারনে অত্যাচার, জুলুম, নির্যাচন ও বিভিন্ন ভাবে হয়রানি মূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিনের বাড়ি, জসিম উদ্দিনের বাড়ি, তারাকান্দা এলাকার রুস্তম আলীর বাড়ি, মোজাকান্দা এলাকার এমদাদুল হকের বাড়ি ভাংচুর করে লোটপাট করা হয়। প্রকাশ্যে চশমা প্রতীকে ভোট না দিয়ে নৌকা প্রতীকে প্রচার ও ভোট দেওয়ার পুড়িয়ে দেওয়া হয় পিছলাকুড়ি এলাকার মুদির দোকানদার মাহবুবের দোকান, শালখা এলাকার ভ্যান চালক দরিদ্র খোকার মিয়ার একমাত্র আয়ের মাধ্যম ভ্যানটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এছাড়া চশমা প্রতীকে ভোট না দিয়ে নৌকা প্রতীকে প্রচার ও ভোট দেওয়ায় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কল্পনিক নোটিশ করে গ্রাম পুলিশ দিয়ে পরিষদে ডেকে এনে নির্যাতন ও ভয়ভীতে দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগও করেন তারা।

নকলা থানার ওসি মোঃ মুশফিকুর রহমান জানান, গত মধ্যরাতে উরফাতে এক অন্তসত্বা নারী ও আওয়ামী লীগ নেতার পরিবারের সদস্যদের শারীরিক নির্যাতন এবং এক আওয়ামী লীগ নেতাকে অবরুদ্ধ করে রাখার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ এবং এক অন্তসত্বা নারী ও বৃদ্ধা মা-বাবাকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগামী আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় আমি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসার বিষয়টি নিয়ে কথা বলব এবং প্রশাসনসহ উপর মহলে বিষয়টি অবগত করব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উরফা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আক্তারুজ্জামান, ইউনিয়ন যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মিয়া, ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ নেতা রুবেল ফরাজী ও জসিম উদ্দিনসহ অনেকের মৌখিক বক্তব্যে জানা গেছে, অতিসম্প্রতি ভূট্টোর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারী কিছু সন্ত্রাসী প্রকৃতির যুবক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা রুবেল ফরাজীর বাড়িতে মাঝরাতে প্রবেশ করে রুবেলের অন্তসত্বা স্ত্রী ও তার মাকে শারীরিক নির্যাতন করে এবং রুবেলকে তার ঘরেই অবরুদ্ধ করে রাখে। নকলা থানার পুলিশ এ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে রুবেলকে উদ্ধার করেন। এই উদ্ধারের বিষয়টিকে পুঁজি করে চেয়ারম্যানের ভাগিনা তাসনিমুল হাসান নির্ভিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে রুবেলকে চোরের অপবাদ দিয়ে আপত্তিকর লেখা পোষ্ট করে এমনকি নিজস্ব লোকের একটি পোর্টালে পুলিশের হাতে চোর আটক শিরোনামে খবর প্রকাশ করে এবং কিছু কিছু লোকের মাধ্যমে পোষ্ট ও কমেন্টস করানো হয়।

এবিষয়ে তথ্য প্রযুক্তি আইনে ও মানহানীকর আলাদা আলাদা দুটি মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী নেতা রুবেল মিয়া। এক্ষেত্রে দলের মানইজ্জত রক্ষায় রুবেলকে সার্বিক সহযোগিতা করবে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এমনটা জানিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নাজিম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আক্তারুজ্জামান, ইউনিয়ন যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মিয়াসহ স্থানীয় অনেকে।

নির্বাচন পরবর্তী এমন ন্যাক্কার জনক এসব ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা জরুরি বলে দাবী করছেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দসহ সব পেশা শ্রেণীর জনগন।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।