• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২১ অপরাহ্ন |
  • English Version

নকলা অদম্য মেধাবী সংস্থার হুইল চেয়ারে বসে খুশিতে আত্মহারা প্রতিবন্ধী মুনা !!

নকলা(শেরপুর) প্রতিনিধিঃ ভাগ্য অনেক সময় মানুষের সহায় থাকে না। স্রোত সবসময় নিজের অনুকূলে থাকে না। উপরওয়ালা কাওকেই পুরোপুরি পরিপূর্ণ করে সৃষ্টি করেননি।মানুষকে কোন না কোন দিক দিয়ে কমতি রেখেই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন । কারো কমতিটা ধরা পড়ে না, আবার কারোটা ধরা পড়ে। তবে হয়তো অনেকের জীবনে কমতির পরিমানটা হয়তো একটু বেশিই হয়ে থাকে।

শারিরীক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্ম নিয়ে অন্যরকম শৈশব কাটে তার। ছোট বেলায় শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও বাইরের আলো দেখার সৌভাগ্য হতো তার। সেটাও অবশ্য মায়ের কিংবা অন্যকারো সাহায্য নিয়েই সম্ভব হতো। কিন্তু সময়ের স্রোতে থেমে থাকেনি তার জীবন।  শারীরিক সক্ষমতা না থাকলেও প্রকৃতির নিয়মেই বৃদ্ধি পেয়েছে তার শারীর।

বড় হওয়াটা আমাদের অনেকের জন্য সৌভাগ্যময় হলেও তার জীবনে হয়ে উঠেছে এক প্রকট দেয়াল। বড় হওয়াটা তাকে ঠেলে দিয়েছে এক দূর্বিষহ জীবনে। আস্তে আস্তে শারীরিক অক্ষমতা তাকে থাকতে বাধ্য করেছে একরুমে বন্দী জীবনে। ছোটবেলায় মায়ের কুলে কিংবা অন্যকারো কুলে চড়ে বাইরের আলো দেখা হলেও বর্তমানে বাইরে যাওয়া তার স্বপ্নের মতো হয়ে গিয়েছে।

বলছি শেরপুরের নকলা উপজেলার পাঠাকাটা ইউনিয়নের পাঠাকাটা বাজার এলাকার মুখলেস মিয়ার প্রতিবন্ধী মেয়ে মুনার কথা। ছোটবেলায় বাবা মায়ের আদরের সন্তান হওয়া স্বত্বেও বর্তমানে একরুমের বন্ধী জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছিলো মুনা। শারীরিক ভাবে বড় হয়ে যাওয়ায় মায়ের পক্ষে এখন আর সম্ভব হয়না আদরের মেয়েকে বাইরে নিয়ে যাওয়া।

মুনার বাবা চা ব্যবসায়ী মুখলেস  জানান, ছোট একটা চায়ের দোকান চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই কোন রকমে সংসার চলে। মেয়েটাকে ছোট বেলা বাইরে কোলে নিয়ে ঘুরাতাম।এখন বড় হয়ে গেছে ইচ্ছা থাকলেও এখন আর কোলে করে বাইরে বের করা সম্ভব হয়না। তাই সবসময়  ঘরের ভিতরেই থাকতে হয় মুনাকে।

শারীরিক ভাবে চলাচলে অক্ষম ব্যক্তিদের নিয়েই কাজ করছে নকলা অদম্য মেধাবী সংস্থা নামক একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংস্থাটির বর্তমান কার্যক্রম নকলা উপজেলার সকল প্রতিবন্ধীদের হুইল চেয়ারের আওতায় আনা।

এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবন্ধী মুনার তথ্য পেয়ে আজ সংস্থাটির সদস্যরা হুইল চেয়ার নিয়ে ছুটে যান প্রতিবন্ধী মুনার বাসায়। নতুন হুইল চেয়ারে বসে মুনা যেন খুশিতে আত্মহারা হয়ে গিয়েছে।

মুনার মা জানান, ছোট সময় মেয়েকে নিয়ে বেড়ানো যেতো এখন আর পারি না। বাইরে বের করে গোসল করিয়ে আবার রুমে এনে রেখে দিতে হয় মুনাকে। গোসলের জন্য বাইরে বের করতে গেলেও একা পারি না সাহায্য নিতে হয় অন্যকারো। আর্থিক কারনে মেয়েকে হুইল চেয়ার কিনে দিতে পারিনি। তবে এখন এই হুইলে চেয়ারে বসিয়ে মুনাকে অনেকটা সহজভাবেই বাইরে বের করা সম্ভব হবে।

নকলা অদম্য মেধাবী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, নকলা অদম্য মেধাবী সংস্থার লক্ষ্য হলো উপজেলার সকল প্রতিবন্ধী যারা চলাচল করতে পারে না তাদের হুইল চেয়ার প্রদান করা। এর ধারাবাহিকতায় আজ প্রতিবন্ধী মুনাকে হুইল চেয়ার দেওয়া হলো। আস্তে আস্তে উপজেলার সকল প্রতিবন্ধীদের আমরা হুইলচেয়ারের আওতায় নিয়ে আসবো।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।