• মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন |
  • English Version

বজলুর রহমান-এঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নকলা প্রেস ক্লাব’র আলোচনা দোয়া মাহফিল

বজলুর রহমান-এঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নকলা প্রেস ক্লাব’র আলোচনা দোয়া মাহফিল

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি:

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, কলামিষ্ট, দৈনিক সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক বজলুর রহমান-এঁর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শেরপুরের ‘নকলা প্রেস ক্লাব’-এর উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

প্রয়াত বজলুর রহমান-এঁর স্মরণে রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে নকলা প্রেস ক্লাব অফিসে ক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন এর সভাপতিত্বে তাঁর কর্মকান্ডের ওপর স্মৃতিচারণ মূলক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নূর হোসেনের সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণ মূলক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন ও দেলোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফজলে রাব্বী রাজন প্রমুখ।

এসময় প্রেস ক্লাবের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল আমিন, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান সৌরভ, প্রচার সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম রিজন, সদস্য সিমানুর রহমান সুখন, এস.কে নেটওয়ার্ক এন্ড কমিউনিকেশনসের সত্ত্বাধিকারী খায়রুল ইসলাম, মুফতি জহিরুল ইসলাম, পীরজাদা ক্বারী ফিরোজ আহাম্মেদ, চৌধুরী ছবরুন নেছা মহিলা কলেজের গেস্ট লেকচারার সাজ্জাদ হোসেন সোহাগসহ নকলা প্রেস ক্লাবের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।

রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখা বজলুর রহমান ২০০৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাতটার সময় পুরান ঢাকার ওয়ার্লেস গেইটে বেগম মতিয়া চৌধুরীর সরকারি বাসভবনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানী ঢাকার কার্ডিয়াক হাসপাতালে বিশেষ কেবিনে চিকিৎসারত অবস্থায় ২৬ ফেব্রুয়ারিতে তাঁর মৃত্যু হয়। নকলা উপজেলার পাইলট হাইস্কুল মাঠে জানাযা নামাজ শেষে ঢাকায় আরও একটি জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাজধানী ঢাকার শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়। এর পর থেকে প্রতি বছর শেরপুর, নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ বছরও এর ব্যাতিক্রম হয়নি।

বক্তারা দৈনিক সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক মরহুম বজলুর রহমান-এঁর গনমাধ্যমসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডের উপর স্মৃতিচারণ মূলক বক্তব্য রাখেন। তারা জানান, বজলুর রহমান তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার চরনিয়ামত গ্রামের আব্দুর রহমান মৌলভীর ঘর আলো করে ১৯৪১ সালের ৩ আগষ্ট জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশবাসীকে কাঁদিয়ে তিনি নাফেরার দেশে পারি জমান। তিনি মহান জাতীয় সংসদের বর্তমান উপনেতা, সাবেক সফল কৃষিমন্ত্রী, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি’র স্বামী ছিলেন। বক্তারা আরও জানান, বজলুর রহমান নকলা উপজেলার স্থানীয় এক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণি পাশ করার পরে উপজেলার গণপদ্দি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্টিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উর্ত্তীণ হন। পরে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজে ও বরিশালের বজ্রমোহন কলেজে পড়া লেখা করেন। তারপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করেন।

বজলুর রহমান সাংবাদিকতায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করার পর ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সভাপতি ছিলেন। তিনি ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর ৫৮ সালের শিক্ষা আইনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। অত:পর পর্য়ায়ক্রমে ৬২’র সংবিধান, ৬৬’র ৬দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুথান, ৭০’র সাধারণ নির্বাচন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ এসকল আন্দোলনে ও দিবস গুলিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।

তিনি নরসিংন্দি জেলার ব্যারিস্টার আহমেদুল কবিরের সম্পাদিত দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে ছিলেন। পরে ৯৬ এর শেষ দিকে নিজে ওই পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সুনামের সহিত নিয়মিত প্রকাশ করে গেছেন।

তাছাড়া প্রথিতযশা সাংবাদিক বজলুর রহমান দৈনিক সংবাদ পত্রিকার লেখনীর মাধ্যমে তিনি দেশ বিরোধীর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তিনি ছিলেন সংবাদের এক সাহসী কলম সৈনিক। বজলুর রহমান পরামর্শ মূলক লেখনীর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধের পক্ষে আন্দোলনকে বেগবান করে তুলেন।

সামাজিক জীবনে কচি-কাচাদের শিশু সংগঠন ‘খেলা ঘর’ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলেন। তার অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশের অন্তত ৩০টিরও বেশি জেলায় খেলা ঘর আসর নামে অরাজনৈতিক এ সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজও এসকল সংগঠনে সুনামের সহিত উন্নয়ন মূলক বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালিত হয়ে আসছে।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।