• মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন |
  • English Version

শেরপুরে কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তায় ভিক্ষুকের ১০ হাজার টাকা দান

এম সুরুজ্জামান শেরপুরঃ

 

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নজিমুদ্দিন নামের ৮০ বছর বয়সী এক ভিক্ষুক বর্তমান করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের কারনে মানুষ ঘরে বসে কর্মহীন সময় পাড় করছেন। এসময়ে তাদের সংসার চালানো কষ্ট সাধ্য ব্যপার হয়ে দাড়িয়েছে। সেই অসহায় কর্মহীন মানুষের সহায়তা যোগাতে নিজের বসত ঘর মেরামত করার জন্য দুই বছরে ভিক্ষা করে জমিয়েছেন ১০ হাজার টাকা।

কিন্তু এ টাকা দিয়ে তার নিজের ঘর মেরামত না করে ওই টাকা দান করলেন জেলার ঝিনাইগাতীতে কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তার জন্য খোলা তহবিলে।

 

মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের বাতিয়াগাঁও এলাকায় ইউএনও রুবেল মাহমুদের হাতে এ টাকা তুলে দেন ওই ভিক্ষুক। তিনি উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের ইয়ার আলীর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঘরবন্দী হওয়া কর্মহীন মানুষদের সরকারী ও বেসরকারীভাবে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে ।
গত রবিবার ইউএনও রুবেল মামুদের নির্দেশে খাদ্য সহায়তার জন্য  স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দি প্যাসিফিক’ ক্লাবের সদস্য ও স্থানীয় ইউপি সদস্যরা কর্মহীন অসহায় দরিদ্রদের তালিকা প্রণয়নে গান্ধীগাঁও গ্রামে যান।

 

ভিক্ষুক নজিমুদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে তাকে ইউএনর’র পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার কথা বলে তার জাতীয় পরিচয়পত্র দেখতে চান তারা। পরে ভিক্ষুক ওই তালিকায় তার নাম না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন তিনি। একই সঙ্গে ওই ভিক্ষুক বলেন, নিজের বসত ঘর মেরামত করার জন্য দুই বছরে ভিক্ষা করে জমিয়েছেন ১০ হাজার টাকা। এ টাকা স্বেচ্ছায় বর্তমান পরিস্থিতিতে অসহায়দের খাদ্য দেওয়ার জন্য দান করবেন তিনি।  পরে মঙ্গলবার ‘দি প্যাসিফিক’ ক্লাবের সদস্য ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউএনও’র কাছে ওই ভিক্ষুককে নিয়ে আসলে তার জমানো ১০ হাজার টাকা ইউএনও’র হাতে তুলে দেন।

এ সময় ভিক্ষুক নজিমুদ্দিন গনমাধ্যমকর্মীদের কাছে বলেন, ‘আমি ভিক্ষা করে খাইয়ে- খুইচরে দুই বছরে এ টেহা জড়ো করছি। আমার ঘরডা ভাঙ্গে গেছে গ্যা। এহন আর ঘর-দরজা দিলাম না।দশে এহন (মানুষ) কষ্ট করতাছে, আমি এ টেহ্যা ইউএনও সাহেবের হাতে দিলাম। দশেরে দিয়ে দেখ, খাইয়ে বাঁচুক।’

এ ব্যপারে ইউএনও রুবেল মাহমুদ বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে কর্মজীবি মানুষ কর্মহীনতায় ভুগছেন। এখানে কর্মজীবি মানুষের সংখ্যায় বেশি। এর জন্য সরকারী চাল দেওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে তহবিল খোলা হয়েছে। আজকে একজন ভিক্ষুক যিনি ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করে। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে উর্পাজিত ১০ হাজার টাকা আমাদের তহবিলে দিয়েছেন।

 

এ কাজের জন্য নজিমুদ্দিনকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।  এটা মহানুভবতার নজীরবিহীন উদাহরণ। এ উদাহরণের মাধ্যমে সমাজের যারা বিত্তশালী আছেন, তাদের প্রতি আহ্বান জানাই এ দুর্যোগের সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।