• বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন |
  • English Version

বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ পেয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন ৩৯ জন প্রতিবন্ধী বকশীগঞ্জে দুস্থ,প্রতিবন্ধীদের শেষ ভরসা খাইরুলের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

জিএম সাফিনুর ইসলাম মেজর ,বকশীগঞ্জ(জামালপুর)প্রতিনিধি:
জামালপুরের বকশীগঞ্জে অসহায়দের সহায় হয়ে মানবতার সেবাই কাজ করে যাচ্ছেন খাইরুল ইসলাম। সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির কথা চিন্তা করে তৈরি করেছেন দুস্থ,প্রতিবন্ধী শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
বকশীগঞ্জ পৌর এলাকার মালিরচর মৌলভীপাড়ায় নিজ অর্থায়নে ২০১৩ সালে খাইরুল ইসলাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করেন। ৩৫ জন শিক্ষার্থী দিয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র শুরু হলেও বর্তমানে রয়েছে ১৬২ জন। প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয় , সময় ও সুযোগ পেলে তারাও যে দেশ, জাতির উপকার করতে পারে তা তিনি প্রমাণ করতেই প্রতিষ্ঠা করেন এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
দীর্ঘ সাত বছর ধরে বিভিন্ন এলাকার দুস্থ, প্রতিবন্ধীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদেরকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়ে দেওয়াই খাইরুলের প্রধান উদ্দেশ্য। তবে অর্থের অভাবে ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অবকাঠামো উন্নয়ন করতে পারেন নি তিনি। তবুুও পিছপা হন নি প্রতিবন্ধীদের সহায়ক হয়ে তাদের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। এই খাইরুল ইসলামই এখন প্রতিবন্ধীদের শেষ ভরসা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রর পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের পড়াশুনাও করানো হয়। পড়াশুনার পাশাপাশি বিনামূল্যে বিভিন্ন এলাকার দুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হয়। ১৪ জন শিক্ষকের মাধ্যমে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, হস্তশিল্প নকশীকাঁথা, দর্জি বিজ্ঞান, মোবাইল সার্ভিসিং, খাদ্য প্রক্রিজাতকরণ সহ বিভিন্ন কোসে দুস্থ ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জীবন মান উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৩৯ প্রতিবন্ধী এখন নিজের পায়ে দাড়িয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন। সমাজের বোঝা না হয়ে তারা এখন পরিবারকে স্বচ্ছলতা এনে দিয়েছেন।
এ পর্যন্ত ১৭২ জন দুস্থ ও প্রতিবন্ধী মেয়েকে সেলাই প্রশিক্ষণ , ১২৮ জন কে হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আচাঁর, দই, মিষ্টি ও খাদ্য সামগী তৈরি করে ১৬ জন বিভিন্ন এলাকা সরবরাহ করছেন। এতে করে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে পরিবারকে সহযোগিতা করছেন। শুধু তাই নয় এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগও রয়েছে। ২০১৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৫ জনই জিপিএ-৫ পেয়ে সফলতা অর্জন করেছেন।
সম্প্রতি বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিলে মানুষের কথা চিন্তা করে এই প্রতিবন্ধী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষকদের অর্থায়নে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা তিন হাজার ২০০ পিস মাস্ক নিজেরাই তৈরি করে সমগ্র উপজেলায় বিতরণ করেছেন।
এ বিষয়ে মালিরচর মৌলভী পাড়া দুস্থ,প্রতিবন্ধী শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক খাইরুল ইসালম জানান, প্রতিবন্ধীরা কিছু করতে পারেন না একথাটি তিনি মানতে নারাজ। কারণ তাদেরকে কর্মের সুযোগ তৈরি দিলে একজন সুস্থ মানুষের মতই তারাও কাজ করতে পারেন। সমাজের পিছিয়ে পড়া এসব বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের কথা চিন্তা করেই তিনি প্রতিবন্ধী শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তিনি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির উন্নয়নে সরকার ও স্থানীয় বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।